lalonzinnah

লালনকে আমি খুব ভালবাসি কারন আমার কাছে লালন এর নামের অর্থ আবেগ এবং বিবেক। খটকা লাগছে? এই দুই শব্দের সহাবস্থান কিভাবে সম্ভব। জিন্নাহ-র দ্বিজাতি তত্বের কথা মনে আছে আপনাদের? থাকবে হয়তো না থাকলে মনে করিয়ে দেই:

Advertisements

দ্বিজাতি তত্বই মুসলিম এবং হিন্দুকে সামনা-সামনি দাঁড় করিয়ে দেয়। দ্বিজাতি তত্ব অনুযায়ী, মুসলিম এবং হিন্দু আলাদা: ধর্মীয় বিশ্বাস, আচার-আচরন কিংবা সাংস্কৃতিক দিক থেকে। সতরাং তাদের সহাবস্থান অসম্ভব যদিও কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে তখনো মুসলিম হিন্দু বসবাস করছিল।

প্রথম অংশ পড়ে মনে হতে পারে আসলেইতো জিন্নাহ যা বলেছে তাবৎ ঠিক কথা। ধর্মীয় বিশ্বাস, আচার-আচরন কিংবা সাংস্কৃতিক দিক থেকে মুসলিম হিন্দু আলাদা। কিন্তু আমি যাদেরকে আলাদা বলছি এবং যারা একই ছাদের নিচে থাকতে পারবেনা বলে ঘোষনা দিচ্ছি তারা কিন্তু বহুবছর ধরে এক সাথেই বসবাস করে আসছে। বিবেকের দিক থেকেও সঠিক, আবেগের দিক থেকেও সঠিক।

লালন ঠিক এমনই, লালন তথা লালনের গানের কথা একই সাথে আবেগ এবং বিবেক প্রকাশ করে। আবেগ এবং বিবেকের অবস্থান দুই মেরুতে যতটা ঠিক লালনের ক্ষেত্রে তাদের সহাবস্থানও সঠিক।

বাড়ির কাছে আরশী নগর
(একঘর) সেথা পড়শী বসত করে-
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।

লালন

“বাড়ির কাছে আরশী নগর” লালনের এই গানের কথার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় আবেগ এবং বিবেক কতটা ওতপ্রেতভাবে জড়িত। যদি আবেগের চোখে দেখেন তাহলে লালন প্রেয়সী শোকে কাতর। কিন্তু বিবেকের চোখে দেখলে এর অর্থ দাঁড়ায় মুসলিম এবং হিন্দু একই সাথে বসবাস কিন্তু তারপরও কত দূর।

একই গানের মাধ্যমে আবেগ এবং বিবেক তুলে ধরা লালনের স্পেশালিটি। আবেগ এবং বিবেকের এমন সহাবস্থান সৃষ্টির রূপকার তাই আমার কাছে একইসাথে আবেগ এবং বিবেক।

লালন এবং জিন্নাহ এই দুই আইডোলজির সমন্বয়ে গড়ে উঠতে পারে একটি চরিত্র যাকে আমরা লালন জিন্নাহ হিসেবে ডাকতে পারি। যে চরিত্রের মাধমে আমরা একই সাথে আবেগ এবং বিবেক ফুঁটিয়ে তুলতে পারি। ভালবাসা এবং বিদ্বেষের সংমিশ্রন থেকে ভাল কিছু তুলে আনাই যার উদ্দেশ্য। লাল একই সাথে বিদ্বেষ এবং ভালবাসাকে প্রকাশ করে তাই থিম কালার হিসেবে লালকে নির্বাচিত করতে পারি।

One thought on “লালন জিন্নাহ সাথে কিছুটা আবেগ আর বিবেক”
  1. ৭১ এর মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস (ATN) ডকুমেন্টারি টা দেখেছি,ভাল লাগল।
    জিন্নাহ সাহেবের ঘটনা আছে ঔটাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।