stree 2019

স্ত্রী ২০১৮ সালের হিন্দি সিনেমা যা একটি সত্য সর্বজন শ্রুত মিথের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। ‘৯০ এর দশকে দক্ষিন ভারতে প্রায় অধিকাংশ বাড়ির বাইরে লিখা থাকতো “নালে বা” যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় “কাল এসো”। তখনকার সময়ে ঘূর্খা বা এক জাতের নিশাচর প্রহরী গ্রাম বা শহরগুলো পাহারা দিত তাঁরা নাকি মাসের শুরুর কয়দিন সন্ধ্যার দিকে বাড়ি-বাড়ি ধরনা দিত পাঁচ রুপি আর এক কাপ চা খেয়ে যেত। এসময় গৃহ-স্ত্রীদের সাথে কথা বলতোনা দরজায় খড়খড়ির শব্দ আর রুটিন মাফিক আসার কারনে সবাই শব্দ শুনেই বুঝে যেত। এই ঘূর্খাদের নিয়োগের প্রধান কারন ছিল স্ত্রী নামক প্রচলিত মিথের জন্য। ঘূর্খারাই সবাইকে বলতো বাড়ির দেয়ালে লিখে রাখতে “নালে বা” সময়ের সাথে ভিন্ন ভাষাভাষীদের জন্য এর অর্থ অনুবাদিত হয়ে “স্ত্রী, কাল আস”-তে রুপান্তরিত হয়। তখনকার সময়ে দেবনগরী (হিন্দি) লেখায় লোক এত পারদর্শী ছিলনা যার দরুন ঘূর্খারাই কিছু টাকার বিনিময়ে লাল রঙে লিখে দিত। এমনকি আজকের দিনেও পূজা-পার্বন উপলক্ষে বাড়ির বাইরে অনেকেই লিখে রাখে।

Advertisements

লোকের বিশ্বাস ছিল স্ত্রী নামক রাক্ষসী পুরুষদেরকে রাতে ঘরের বাইরে থাকলে তুলে নিয়ে যায়। কিংবা যে বাড়ির দেওয়ালে “নালে বা” লিখা না থাকে তাদের উপার্জনকারী পুরুষদের তুলে নিয়ে যায়। অনেকের মতে এ সম্ভবত ডাকাতদের সৃষ্ট মিথ যাতে সহজে ডাকাতি করে কেটে পড়া যায় আবার অনেকের মতে ঘূর্খারাই এই মিথের জনক! পয়সা-কড়ি ভালই মিলত।
শোলে সিনেমা যারা দেখেছেন এর সাথে কিছুটা রিলেট করতে পারেন!

এমন রিডিকিউলাস মিথ এখনো মানুষের মনে বসবাস করছে সেই সুযোগে পরিচালক ভদ্রলোক ঘূর্খাদের মতো কিছু টাকা কামানোর আশায় কিংবা সত্যই সবাইকে জানানোর আশায় এই সিনেমাটি নির্মান করে। মূল চরিত্রে রাজকুমার রাও এবং শ্রদ্ধা কাপুর। পরিচালনার দিক থেকে প্রশংসার দাবিদার যখনই ইন্টেন্স তৈরী করতে চেয়েছে পেরেছে। টুইস্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছে তবে অনেকের মতে বেশি বাড়াবাড়ি- মানে দর্শককে বৃদ্ধাঙুলি দেখানো

“হে! হে!! তুমি কেঁলা পার না!”

[imdb]https://www.imdb.com/title/tt8108202/[/imdb]

অভিনয়ে রাজকুমার রাও, পঙ্কজ তিওয়ারি অসাধারন। সিনেমা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম রাজকুমার এমন সিনেমা কেমনে পছন্দ করলো কিন্তু দিন শেষে (মানে সিনেমা শেষে 😛 ) যেই মেসেজটা দেয় সম্ভবত তা-ই রাজকুমারকে এই প্রযেক্টে সংযুক্ত করেছে।

“আমরা যতদিননা স্ত্রী জাতিকে সম্মান করতে পারবো, ভালবাসতে পারবো ততদিনে আমাদের দূ:খ ঘুচছেনা।”


আবেগ আপ্লুত হয়ে গেলেন নাকি??? আসলে যতদিননা আমারা তাদেরকে বিশ্বাস করাতে পারি- আমরা তাদেরকে ভালবাসি এবং শ্রদ্ধা করি ততদিনে আমাদের কপালে শনি আছে!

বাজারে (টরেন্টে) WEB-DL প্রিন্ট পাওয়া যায় দেখে নিতে পারেন, ভালই।

বিদ্র: গরীবরা নাকি মতামত দিতে পছন্দ করে সেদিক থেকে আমিতো ফতুর!

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।